Wednesday, October 19, 2016

Case History of Kreosotum



Case History-01
ডা এম এ গণি সাহেবের একটি কেসহিস্ট্রি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
বালিকার নাম-সুইটি।বয়স ৩ বছর।পিতা-মোঃ শফি উদ্দিন।গ্রাম-কয়া।পোঃ কেন্দুয়া বাজার।জিলা-টাঙ্গাইল।তারিখ-১-১২-৮৪।প্রধান রোগ আঁচিল।জন্মের প্রায় এক বৎসর পর হতেই পিঠে,হাতে,নানা স্থানে আঁচিল উঠতে থাকে।আগে তার অধিকাংশগুলো পেকে ভাল হয়ে যেত এবং আবার হোত।কিন্তু ইদানীং তা হতে এত রক্তস্রাব হয়,যা দেখে ভয় হয় যে,এত বেশী রক্তস্রাব হলে এতটুকু মেয়ে বাঁচবে কি করে ? প্রথমতঃ ২ মাস অন্তর থুজা ১০০০ শক্তিতে ২ মাত্রা করে মোট ৪ মাত্রা প্রয়োগ করি।কিন্তু ভাল হোল না।তখন অবিশ্যি রক্তস্রাব ছিল না।৬ মাস অপেক্ষা করেও কোন ফল না হওয়ায় ১-৬-৮৫ তারিখে রক্তস্রাব বেশী হওয়ায় কস্টিকাম ১০০০ দুই মাত্রা এবং তার ২ মাস পরে আবার কস্টিকাম ১০০০ দুই মাত্রা প্রয়োগ করি।কিন্তু ভাল তো হোলই না বরং রক্তস্রাব এত বাড়লো আঁচিল হতে যে,সবাই ভীত হয়ে গেল।

পিতা মাতার অসন্তুষ্টি চরমে উঠলো।বাধ্য হয়ে নূতন করে রোগীলিপি প্রস্তুত করি।তাতে মেয়েটির মানসিক লক্ষণে দেখা গেল-বায়নার পর বায়না ধরাই তার স্বভাব।ধনীর দুলালী,তাই বায়না পুরনের খুব একটা অভাব নেই।এক খুটি (ছোট পাত্র) দিয়ে হয়তো খেলছে,এর মধ্যেই বায়না ধরল আরেকটি খুটি দিতে হবে।মায়ে হয়তো দিল।৫/৬ মিনিট সেটা দিয়ে খেলে আবার বায়না ধরল পোড়া মাটি দিতে হবে মশলা বাটার জন্য।তাও দেওয়া হোল।আবার বায়না ধরল কচুর ডাটা দিতে হবে।সেটা জবাই করে গোস্ত কুটবে ও পাক করবে (খেলাচ্ছলে)।

দেয়া হোল।কতক্ষণ পরে ভাত চাই।তাও দেয়া হোল।আবার জামা চাই।এইভাবে প্রতি নিয়ত একটা না একটার বায়না আছেই।দিলেও ৫/৭ মিনিটের বেশী সেটা নিয়ে থাকে না।আবার আরেকটি চাই।না দিলেই কান্না।গড়াগড়ি,আরও কত কি।বাপ,মা,বিশেষতঃ মায়ের জীবনের কাজ শেষ।তার জন্য মারধরও করা হয় যথেষ্ট,কিন্তু কাজ হয় না।কিছুক্ষণ কান্নাকাটির পরে বেশরমের মত আরেকটি দ্রব্য চায় ও না দিলে কাঁদতে থাকে।দেহ শীর্ণ ও লম্বাটে।রং ফর্সা,সামান্যতেই ঠান্ডা লাগে।ঠান্ডা মোটেই সহ্য হয় না।
অতপর-আকাঙ্খা আছে কিন্তু সন্তুষ্টি নেই,লম্বাটে শীর্ণ দেহ,অত্যাধিক রক্তস্রাব ও শীতকাতরতা লক্ষণ ৪টির উপর নির্ভর করে ক্রিয়োজোট ১০০০ শক্তির ২ মাত্রা পর পর দুই দিন প্রাতে খালি পেটে সেবন করতে দেই ১-১১-৮৫ তারিখে।এতে ৩ মাস ভাল থাকার পর আবার ২/৩ টা আঁচিল উঠলে ১-২-৮৬ তারিখে আবার ক্রিয়োজোট ১০০০ শক্তি ২ মাত্রা পূর্ব নিয়মে খেতে দেই।আর ঔষধ দিতে হয়নি।এখনো মেয়েটি ভাল।বায়না ধরার প্রবৃত্তিও অনেক কমে গেছে।আকাঙ্ক্ষা আছে কিন্তু সন্তুষ্টি নেই লক্ষণটি ক্রিয়োজোটের নিজস্ব লক্ষণ।অন্য কোন ঔষধে লক্ষণটি নেই।শীর্ণ দেহ ও শীতকাতরতা বহু ঔষধে আছে কিন্তু তাদের চাহিদার সাথে অসন্তুষ্টি নেই।বায়না ধরার অভ্যাস ক্যামোমিলা ও সিনাতে আছে কিন্তু তাদের রক্তস্রাবের বিশিষ্টতা নেই।

Case History-02
একটি মেয়ে যে খুব দ্রুত বেড়ে উঠে অনেক লম্বা হয়ে গেছে,গায়ের রং কালো এবং দাঁতে ক্ষয় দেখা দিয়েছে।
মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হল।প্রথমদিন স্বামী সহবাসের সময় প্রচুর পরিমাণে রক্তস্রাব হল।এভাবে প্রতিবারই সহবাসের সময় রক্তপাত হতে থাকল।লিপ কিস দিতে গিয়ে ঘটল আরো বিপত্তি।হাজবেন্ড মুখ থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ অনুভব করল।
স্বামী বেচারা ওয়াইফকে অনেক সুন্দর সুন্দর পোষাক গয়না কিনে দিল কিন্তু ওয়াইফকে কিছুতেই সন্তুষ্ট করতে পারলনা।কোন কিছুতেই যেন তার সন্তুষ্টি আসেনা।
মেয়েটিকে কাপিং করে একডোজ ক্রিয়োজোট 200 দেওয়া হল।সে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
আলোচ্য কেসটিতে ক্রিয়োজোটের যে সমস্ত লক্ষণ পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো হল :
দৈহিক বৈশিষ্ট্য : দ্রুত বেড়ে উঠা,লম্বাদেহ ও গায়ের রং কালো।
বিশেষ নির্দেশক লক্ষণ : মিলনের সময় রক্তপাত,দাঁতে ক্ষয় ও মুখে দুর্গন্ধ।
মানসিক লক্ষণ : অসন্তুষ্টিভাব।
[বি.দ্র.: দাঁতে ক্ষয় এবং রক্তস্রাব প্রবণতা এই দুটি লক্ষণ টিউবারকুলারের প্রকৃষ্ট লক্ষণ।সর্বদা অসন্তুষ্টিভাব ক্যান্সার মায়াজমের বিশিষ্ট লক্ষণ।তাই আমরা উক্ত ঔষধটিকে টিউবারকুলার এবং ক্যান্সার মায়াজমের রোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ বলে বিবেচনা করতে পারি]।

No comments: